মানুষের জীবন অভিজ্ঞতা দিয়েই গড়া। প্রতিনিয়ত মানুষ নতুন নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করেই চলেছে কিন্তু কিছু কিছু অভিজ্ঞতা মানুষের জীবনে একবারই আসে, তার আর কোন দ্বিতীয় সুযোগ থাকে না। জীবনে প্রথম কিছু করলে যেমন কিছু আনন্দ পাওয়া যায় তেমনি করার সময় কাজ করে নতুন কিছু করার উদ্যম সাথে হালকা কিছু ভয়। ঠিক এই রকমই কিছু নতুন পুরাতন অনন্য অভিজ্ঞতা হয় মোজট্যুর রাজশাহীর অংশ হয়ে।
প্রথমেই মোজট্যুর সম্পর্কে কিছু বলে নিতে চাই। মোজিলা একটি অলাভজনক সংস্থা এবং এরা “ওপেন ওয়েব” কে ছড়িয়ে দেবার জন্যে সারা পৃথিবী জুড়ে কিছু অনুষ্ঠানের আয়জোন করে থাকে। যে শহরে অনুষ্ঠান সেখানে যদি ঐরকম একটি অনুষ্ঠান করার মত জনবল না থাকে তাহলে অর্থাৎ বক্তৃতা দেবার জন্যে বা মানুষকে মজিলার উদ্দেশ্য সম্পর্কে অবগত করতে ঐ শহরের বাইরে থেকে কিছু লোক (প্রতিনিধি) পাঠানো হয়ে থাকে। যেমনঃ মোজট্যুর রাজশাহীর জন্যে রাজশাহী শহরের বাইরে থেকে আশিকুর রহমান নূর, রাহিদ হাসান , সাফওয়ান রহমান , রাব্বি হোসেন এবং আমি রাজশাহী যাই এবং অনুষ্ঠানটিতে আমাদের বিভিন্ন সেবা, উদ্দেশ্য তুলে ধরি। এই যে বাইরে থেকে বিভিন্ন মোজিলিয়ানদের একটা নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে অন্য শহরে মোজিলার উদ্দেশ্য ছড়িয়ে দেয়াকেই বলা হয় মোজট্যুর।
মোজট্যুর রাজশাহী শুরু হবার একদিন আগেই অর্থাৎ, ১৬ ই এপ্রিল, আমি রাজশাহীতে গিয়ে পৌছাই এবং সেখানকার স্থানীয় প্রতিনিধি ফরহাদ হোসেন এর সাথে আগামী অনুষ্ঠান নিয়ে কিছু আলোচনা করি। উল্লেখ্য, আগামী দিন অর্থাৎ ১৭ তারিখ ফরহাদ ভাই এর প্রতিষ্ঠান রাজশাহী পলিটেকনিকে অনুষ্ঠান ছিল তাই আমরা এই বিষয় নিয়ে একটু আলাপ আলোচনা করে সব ঠিক করে নেই। বেশ কিছুক্ষন আলাপ আলোচনার মাধ্যমে আমরা কিছু কিছু বিষয়ে একমত হই এবং যে যার বাড়ি চলে যাই।
ঢাকা থেকে আসছিলেন আশিকুর রহমান নূর, রাহিদ হাসান (রবিন) , সাফওয়ান এবং রাব্বি হাসান। তারা ট্রেনে ভ্রমন করছিলেন এবং সকাল প্রায় ৪ টা ৫৫ এর দিকে তারা রাজশাহী এসে পৌছান। তাদের অভ্যর্থনা জানাতে সেইসময়ে স্টেশনে উপস্থিত ছিলেন ফরহাদ ভাই। ফরহাদ ভাই তাদের সাথে করে নিয়ে হোটেলে পৌঁছিয়ে দেন এবং তাদের বিশ্রামের ব্যবস্থা করে দেন। নূর ভাই এর সাথে আমার আগে থেকেই কথা হয়েছিল এবং আমি উনার কথা মত সকাল সাড়ে নয়টায় হোটেলে গিয়ে পৌছাই। আমি প্রথমে রাহিদ ভাইয়াদের রুমে যাই এবং সেখানে রাহিদ ভাইয়া ও রাব্বি ভাইয়ার সাথে কিছুক্ষন আলাপ আলোচনা করি। আমাদের আলোচনায় প্রাধান্য পায়, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যেসব অনুষ্ঠানে আমরা অংশগ্রহন করব তাদের এবং আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে। কিছুক্ষনের মধ্যেই রাহিদ ভাইয়াদের রুমে নূর ভাইয়া ও সাফওয়ান এসে পড়েন। নূর ভাই এসেই প্রথমে ফরহাদ ভাই কে ডাক দিতে বলেন এবং আমি ফরহাদ ভাই কে ফোন দেই, সে তার প্রতিষ্ঠানে প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত আছে জানায় এবং প্রায় ১৫ মিনিট পরে আমাদের সাথে যোগ দেয়। ফরহাদ ভাই এসে পড়ার পর আমরা নাস্তা করার জন্যে বের হই। নাস্তা করার সময় আমাদের সাথে যোগ দেন রায়হান ভাই। নাস্তা করার পর আমরা রাজশাহী পলিটেকনিক এর উদ্দেশ্যে রওনা দেই। হোটেল থেকে পলিটেকনিক এর দুরত্ব ছিল প্রায় ৫ মিনিট।
দিন-১ – রাজশাহী পলিটেকনিক – মজিলা সচেতনা কার্যক্রমঃ
আমরা রাজশাহী পলিটেকনিক পৌঁছে প্রথমেই রাজশাহী পলিটেকনিকের CSE এর প্রধানের সাথে সাক্ষাত করতে যাই। তিনি আমাদের কার্যক্রম নিয়ে কিছু প্রশ্ন করেন এবং এর পর আমরা পলিটেকনিক প্রধানের সাথে দেখা করতে যাই। তিনি আমাদের প্রোডাক্ট ও সেবা সহ আমাদের কার্যক্রম নিয়ে বেশকিছু প্রশ্ন করেন এবং আমাদের কার্যক্রমে সম্মতি দান পূর্বক আমাদের অনুষ্ঠান স্থলে নিয়ে যেতে ফরহাদ ভাই কে বলেন। ইতমধ্যেই আমাদের সাথে রুয়েটের কিছু মোজিলিয়ান , আশিকুর রহমান অমিত , মোঃ রাশেদুল ইসলাম, আশিকুর রহমান, মাহাবুবুর রহমান মিলন , প্রমি আমিনা নাসরিন যোগ দান করেন।
কিছু সময় পর আমরা অনুষ্ঠান কক্ষে যাই এবং আমাদের যেখানে বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে সেখানে গিয়ে স্থান গ্রহন করি। কিছু সময় পর কোরান তিলাওতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু করা হয়। প্রথমেই উপস্থাপক একজন শিক্ষককে ভাষন দেবার জন্যে ডাকেন এবং তার ভাষন শুরু হবার পর, মোজিলা বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রাহিদ ভাইয়া পরিচিতি ভাষণ দেন। তার ভাষনে তিনি মোজিলার উদেশ্য, কেন মানুষকে মোজিলা তে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করা উচিৎ, কিভাবে তারা কাজ করতে পারেন ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরেন। অতঃপর আমার জন্যে সব থেকে ভয়ের সময় আসে, স্টেজ থেকে ডাক আসে , “মাহির চৌধূরী আসছেন WebMaker নিয়ে কথা বলতে…..” আমি অনেকটা ভীত ভাবেই স্টেজে যাই। ভীত ছিলাম কারন সেইদিন সকাল পর্যন্ত আমি জানি না যে আমাকে WebMaker নিয়ে কথা বলতে হবে। আমি স্টেজে যাবার পরেই স্বাভাবিক কারনেই টেকনিক্যাল দিকে বেশী ঝোক দিলে নূর ভাই আমাকে ইশারায় তা করতে নিষেধ করেন এবং আমি জেনারেল ভাবে WebMaker এর দরকারী দিক গুলি তুলে ধরি। আমার পর স্টেজে সাফওয়ান আসে এবং SuMo নিয়ে কথা বলে।
এর পরে প্রমি আপু, WoMoz নিয়ে কিছু কথা বলেন। সবার শেষে আসেন নূর ভাই, তিনি উপস্থিত ব্যক্তি দের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। শেষ মুহুর্তে সাফওয়ান সোয়াগ ( স্টিকার এবং ব্যাজ) বিতরন করে। অনুষ্ঠান শেষে নূর ভাই ফরহাদ ভাই এর বন্ধুদের নিয়ে লোকাল ক্লাব গড়ে দেন। এরপর আমরা হোটেলে ফিরে আসি।
এইভাবেই শেষ হয় মোজট্যুর রাজশাহীর প্রথম দিন…..
স্মরনীয় এই দিনের কিছু ছবি দেখুন, এখানে।
আগামীতে RUET App Train Day সম্পর্কে লিখব, ইনশাল্লাহ।